সিরাজগঞ্জের তাড়াশে দুই বছর বয়সী রাইসা আক্তার রশ্নী নামের এক কন্যা সন্তানকে আটকে রেখে তার মাকে বেধরক পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। আহতের নাম বিউটি খাতুন।

সে তাড়াশ সদর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের রায়হান আলীর স্ত্রী ও একই গ্রামের বেল্লাল হোসেনের মেয়ে। শনিবার দিবাগত রাত সারে আটটার দিকে বিউটির স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে নারী নির্যাতনের ঘটনার রাতেই থানায় বাদি হয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন বিউটির বাবা বেল্লাল হোসেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাড়াশ থানার ওসি (তদন্ত) মো. নুরে আলম।

বিউটি বলেন, প্রায় ১২ বছর হয়েছে রায়হানের সাথে তার বিয়ের। তাদের ঘরে দুইটি কন্যা শিশু রয়েছে। বড়টার নাম হিমু (১১)। সে বাক প্রতিবন্ধী। রশ্নী ছোট। বিয়ের আট বছর পরে বিউটির স্বামী সৌদি চলে যান। তখন থেকে দুই কন্যা সন্তান নিয়ে নিদারুণ টাকার অভাবের মধ্যে পড়ে যান। কারণ তার স্বামী টাকা পাঠাতেন তার শাশুড়ির হিসাব নাম্বারে।

সেখান থেকে একটি টাকাও তাকে দেওয়া হত না। বাধ্য হয়ে তিনি এনডিপিসহ বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় চাকরি করে দুই সন্তান নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে থাকেন। কিন্তু তাতেও বাধা দেন শশুর বাড়ির মানুষজন। তারপর সে চাকরি ছেড়ে দেন। এরপর থেকে তার বাবা ও ভাই মুস্তাক্বীম সব সব খরচ বহন করেন।

থানার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন বিকেলে বিউটি তার ছোট মেয়ে রশ্নীকে তার শাশুড়ির কাছে রেখে বাবার বাড়িতে যান। পরে সন্ধার দিকে মেয়েকে আনার জন্য শশুর বাড়িতে ফিরে । কিন্তু তার শশুর আজম সরকার (৫৫), শাশুড়ি আন্না (৪৫), দেবর রানা (২৮) ও ননদ রানীজা (২৪) তার সন্তান দেবেনা বলে সাফ জানিয়ে দেন। সেসময় দুধের জন্য শিশু রশ্নী কান্না করছিল। এ নিয়ে বিউটির সাথে তার শশুর বাড়ির মানুষজনের বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে তারা সবাই বিউটিকে কিল, ঘুষি লাথি মেরে ও কামড়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাত করেন।

পরে প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন নির্যাতনের শিকার বিউটি।

তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক মকবুল হোসেন বলেন, মারধরের কারণে তার শরীর ছিলা ফুলে গেছে। ব্যথায় কাতরাচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হলে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে।

এ প্রসঙ্গে তাড়াশ থানার ওসি (তদন্ত) মো. নুরে আলম বলেন, অভিযোগের তদন্ত করে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে